
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাঈল হোসেন বেঙ্গল।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় মুক্তিযুদ্ধে রাজধানী ঢাকার বেঙ্গল প্লাটুনের কমান্ডার ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি ফরিদগঞ্জ এর উপদেষ্টা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
শোক বার্তায় বেঙ্গল বলেন, অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শকে শ্রদ্ধা করতেন। এছাড়া তিনি সব কিছুকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতেন। তাঁর মধ্যে ছিলো সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রাণান্তকর চেষ্টা। তিনি সারাজীবন গণতন্ত্র ও দেশের উন্নয়নে সংগ্রাম করেছেন। এর প্রেক্ষিতে তিনি জাতীয় ঐক্যকে প্রাধান্য দিতেন। তিনি বহু গবেষণাধর্মী কাজে নিয়োজিত ছিলেন। বিশেষ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কিত তার লেখা অনেক বই বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশের পাঠ্যসূচীতেও অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
এছাড়া, অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদের জাতীয়তাবাদের পক্ষে গণমাধ্যমে তার ক্ষুরধার লেখনী প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত অবস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি মুক্ত স্বদেশ, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, গণতন্ত্র এবং ইসলামিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী ছিলেন। তার চেতনায় বাঙ্গালী জাতি সত্ত্বার উন্মেষ ঘটিয়ে স্বদেশ স্বরাজ গড়ার লালিত স্বপ্ন ছিলো।
অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, আমাকে পুত্র সম স্নেহ করতেন। আমাকে সম্বোধন করতেন বাপু বলে। তার সাথে জীবনের অনেক স্মৃতি রয়েছে আমার। কোথাও কোন সেমিনার-সিম্পোজিয়াম হলেই তিনি আমাকে প্রত্যাশা করতেন। তাঁকে হারিয়ে আমি আবারো পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হলাম। হে মহান আল্লাহ, এই মহাগুণি মহাজ্ঞানীকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমি তার শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনকে আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে সমবেদনা জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৭ জুলাই) ভোরে স্ট্রোক করলে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল পৌঁনে ৬টায় মারা যান তিনি।
পরে বাদ জুমা রাজধানীর নীলক্ষেত কাঁটাবন ঢালের সড়কে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিএনপির শরিক দল ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে এমাজউদ্দীনের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ইসমাঈল হোসেন বেঙ্গল, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সহ মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় জানাজার পর তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মরহুমের স্ত্রীর পাশে সমাহিত করা হয়।
প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন মালদহ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভারতের কিছু অংশ) জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, ১৯৫২ এর পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতা হিসেবে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ কারাবরণও করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান এবং সৃজনশীল লেখার জন্য তিনি দেশ-বিদেশে বিশেষভাবে সম্মানিত হয়েছেন।