
নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশের মতো ফরিদগঞ্জ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থী ছাড়াও কর্মহীন তরুণ সমাজ। এ অবস্থায় তরুণরা রঙ-বেরঙের ঘুড়ি উড়িয়ে সময় পার করছেন। ফরিদগঞ্জের আকাশে নানা রঙের ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়। বিকালে যেন ঘুড়ি উড়ানোর হিড়িক পড়ে যায়। তরুণদের পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধরাও ঘুড়ি উড়ানোতে মেতে উঠছেন।
শহর থেকে গ্রামে সর্বত্রই বর্তমানে চোখে পড়ে ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য। মূলত দুপুরের পর থেকেই শুরু হয় ঘুড়ি উড়ানো, চলে সন্ধ্যা-রাত ১০টা পর্যন্ত। বিকেল বেলা শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী ছেলেরাই অংশ নেয় ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবে।
রাতে ঘুড়ি উড়ানোর সময় হরেক রকম আলোকসজ্জারও ব্যবস্থা করা হয়। আলোকসজ্জা সম্বলিত সেসব ঘুড়ি রাতের আকাশে উড়াতে অনেকটা তারার মতো দেখায়। ঘুড়ি উড়িয়ে তরুণরা আনন্দ উপভোগ করছে, তেমনি সাধারণ মানুষও বেশ আনন্দিত।
যুবসমাজ যাতে অহেতুক ঘোরাঘুরি ও আড্ডা না দেয় এজন্য করোনা সংক্রমণ থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া (দঃ) ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের মো. কবির হোসেন নামে এক ঘুড়ির কারিগর বিনামূল্যে এলাকার তরুণদের ঘুড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন। তিনি এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ঘুড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে জাহাজ ঘুড়ি, পাখি ঘুড়ি, সাপ ঘুড়ি, টেবিল ঘুড়ি, তেলেঙ্গা ঘুড়ি, পাছা ঘুড়িসহ আরও অনেক প্রকার ঘুড়ি রয়েছে।
উপজেলার পাইকপাড়া (দঃ) ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের খানবাড়ির মো. ফজলে মহসিন রাব্বি প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ করে নিজেই তৈরি করেছেন ১৫ ফুট প্রস্থ ও ১২ ফুট উচ্চতার একটি পাছা ঘুড়ি। তিনি বলেন, করোনার কারণে কোনো কাজকাম নাই। বাড়িতে বসে থাকতেও ভালো লাগে না। তাই সময় কাটানোর জন্য ঘুড়িটা তৈরি করেছি। ঘুড়ি উড়ানোর সময় খুব আনন্দ লাগে। আশপাশের অনেক লোকজন ছুটে আসে আমার ঘুড়ি উড়ানো দেখতে। এতে সময়টা ভালোই কাটছে।
পাইকপাড়া ইউ’জি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮র্ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মো. এমজিয়াজ পাটওয়ারী ফরহাদ জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বাইরেও বেশি ঘোরাঘুরি করা যায় না। তাই অবসর সময়টা বাড়ির পাশে পতিত জমিতে ঘুড়ি উড়িয়েই কাটানো হচ্ছে।
ইছাপুরা গ্রামের বাসিন্দা মো. সুমন খান । তিনি একজন ব্যবসায়ীও বটে। তিনি বলেন, গ্রামের মাঠে দাঁড়িয়ে তরুণরা যখন রঙ-বেরঙের ঘুড়ি উড়ায় তখন দেখতে বেশ ভালো লাগে। করোনাকালে অহেতুক ঘোরাঘুরি ও আড্ডা দেয়ার চাইতে ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কাটানো খুব ভালো একটা উপায়।